প্রচ্ছদ > খেলা > অন্যান্য

অনেক ফেডারেশন এখনো স্থবির

article-img

ক্রীড়াঙ্গন সংস্কার চলছে ধীর লয়ে। ৫৪টি ফেডারেশন-অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে এ পর্যন্ত অ্যাডহক কমিটি দেওয়া হয়েছে মাত্র ৯টিতে। অনেক ফেডারেশনই কমিটি ভাঙার সেই আলটিমেটাম মাথায় নিয়ে শেষ পর্যন্ত খেলা শুরু করে দিয়েছে। সাঁতার, তায়কোয়ানদো, আর্চারি, হ্যান্ডবল, ব্যাডমিন্টন, ভারোত্তোলন, কুস্তি, জিমন্যাস্টিকস আছে তার মধ্যে।

তবে সক্রিয় ফেডারেশনের অনেকগুলো আবার অন্তর্বর্তী সরকারের এ মেয়াদে গুটিয়ে গেছে একেবারে। সেই তালিকায় আছে শ্যুটিং, টেবিল টেনিস, ভলিবল। বক্সিং রিংয়ে ধুলো জমেছে। অবশ্য এই খেলাটি স্বাভাবিক সময়েও খুব একটা নিয়মিত নয়।

 

তবে বক্সিংয়ের পাশেই পল্টন উডেন ফ্লোরে টেবিল টেনিস খেলোয়াড়দের পদচারণ থাকত যথেষ্ট। টুর্নামেন্ট হলে তো বটেই, খেলা না থাকলেও নিয়মিত প্রশিক্ষণ ক্যাম্প করেছেন টিটি খেলোয়াড়রা। গত ৫ আগস্টের পর সেই টিটির কোনো কার্যক্রম নেই। খেলোয়াড়রা নিজেদের মতো করে অনুশীলনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

টিটিতে যে কমিটি ছিল, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তাঁদের কাজ চালিয়ে যেতে দেননি খেলোয়াড়দের অনেকে। সিনিয়র খেলোয়াড় জাভেদ আহমেদ যেমন বলেছেন, ‘আমি বর্তমান খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক। আমরাই চাইনি আসলে হাসান মুনীর (সহসভাপতি) বা জাহাঙ্গীর আলমদের (সাধারণ সম্পাদক) লোকজন আর কাজ করুক। কারণ টিটিতে তাঁরাও এক রকম স্বেচ্ছাচারিতা চালাতেন। আমরা এর পরিবর্তন চেয়েছি।’

 

সরকারও পরিবর্তন চায়। কিন্তু টিটিতে নতুন কমিটি এখনো না হওয়ায় আর বর্তমান কমিটিও কাজ করতে না পারায় শেষ পর্যন্ত খেলাটাই স্থবির হয়ে পড়েছে। টিটি কোচ মোহাম্মদ আলীর চাওয়া দ্রুত পরিবর্তন, ‘দেখুন, অ্যাডহক কমিটি করার ক্ষেত্রে আমাদের টিটিকে অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার ছিল, যেহেতু আমাদের এখানে কেউ কাজ করতে পারছে না। কিন্তু আমরা সেখানে পেছনে পড়ে গেছি।’

বক্সিংয়ে প্রায় একই অবস্থা। বক্সিংয়ের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম আওয়ামী লীগ-ঘনিষ্ঠ হওয়ায় এখন ফেডারেশনেই আসতে পারছেন না। ৫ আগস্টের পরপর বৈষম্যবিরোধী ব্যানারে একদল খেলোয়াড় তঁঁকে অবাঞ্ছিতও ঘোষণা করেছে। ফলে অনিয়মিত বক্সিং এখন একেবারে বন্ধ। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অবশ্য এর মধ্যে পুরনো রিং বদলে নতুন রিং বসিয়েছে স্টেডিয়ামে। সেখানে প্রতি বিকেলে ঢাকার কিছু বক্সার অনুশীলন করেন ব্যক্তিগত উদ্যোগে। কিন্তু ফেডারেশনের কোনো কার্যক্রম নেই।

পরিবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন করেছিলেন ভলিবল খেলোয়াড়রাও। কিন্তু তাঁরাও এখনো কাঙ্ক্ষিত কমিটি পাননি। আশিকুর রহমান মিকু এখনো সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল। কিন্তু তিনি কোনো কর্মকাণ্ডও চালাতে পারছেন না। মিকু এ ব্যাপারে নিজের কাঁধে দায় নিতে চাইছেন না, ‘আমরা খেলা করব কোথায়? স্টেডিয়ামজুড়ে আর্মি ক্যাম্প। আগামীকাল (আজ) একটা সভা ডেকেছি ফেডারেশনে কিভাবে কী করা যায় সেই আলোচনা করতে।’

ভলিবল জাতীয় দলের খেলোয়াড় হরশিৎ বিশ্বাস ভেন্যু সংকটকে বড় সমস্যা মানতে রাজি নন, ‘ফেডারেশন চাইলে ঢাকার বাইরে খেলা হতে পারে। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে তো জেলা পর্যায়ে খেলা হয়, সেগুলো চালু করতে পারে। তা ছাড়া ঢাকায়ও তো মিরপুর ইনডোর বা অন্য কোথাও খেলা চালানো যায়।’

শ্যুটিং ফেডারেশনে অবশ্য সাধারণ সম্পাদক নেই। আছে ফান্ড-সংকট। জাতীয় দলের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সার্চ কমিটি থেকে জানানো হয়েছে, ৯টির পর আরো ২২টি ফেডারেশনের কমিটি জমা দিয়েছেন তাঁরা মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে সেগুলো চূড়ান্ত হয়ে আসতে পড়েছে দীর্ঘসূত্রতায়। জেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটিগুলোও ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। সেখানেও এ পর্যন্ত ৯টিতে অ্যাডহক হয়েছে।